ঢাকা ১০:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাজারে নতুন পাট দামে খুশি নয় কৃষক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৫৯:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৭
  • ২২৯ বার
হাওর বার্তা ডেস্কঃ পশ্চিমের জেলাগুলোর হাট-বাজারে প্রতি মন (৪০ কেজি) পাট ১২’শ টাকা থেকে ১৮’শ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। এ দামেও চাষি খুশি নন। চাষিরা বলছে, এ দামে পাট বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না। হাট-বাজার গুলোতে পাটের আমদানি বাড়ছে। ভরা মৌসুম শুরু হয়ে গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার যশোর জেলায় ৩১ হাজার ৪’শ হেক্টরে, ঝিনাইদহ জেলায় ২৪ হাজার ১৭২ হেক্টরে, মাগুরা জেলায় ৪০ হাজার ৪৪০ হেক্টরে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ২২ হাজার ৭০ হেক্টরে, মেহেরপুর জেলায় ২৫ হাজার ৮৪৫ হেক্টরে ও কুষ্টিয়া জেলায় ৪১ হাজার ৫৩৩ হেক্টরে পাট চাষ হয়েছে। এ অঞ্চল এক সময় পাট চাষের জন্য বিখ্যাত ছিল। গড়ে উঠেছিল পাটের মোকাম। এক সময়ের সোনালী আঁশ কৃষকের গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়ায়। চাষি পাট চাষ ছেড়ে অন্য ফসল চাষে ঝুঁকে। গত ৭-৮ বছর পাটের দাম একটু একটু করে চড়ে। ফলে চাষি ফের পাট চাষে ঝুঁকেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, প্রতি বছর পাট চাষ বাড়ছে। জুলাই মাসের প্রথম থেকে বাজারে নতুন পাট উঠতে শুরু করে। ভাল মানের পাট প্রতি মন দু হাজার টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হয়। বর্তমানে দাম একটু কমেছে। চাষিদের কথা পাট চাষে খরচ অনেক বেড়েছে। এক বিঘা জমির পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও ধুতে ১০-১১ হাজার টাকা কামলা খরচ লাগছে। কামলার দৈনিক মজুরি চড়ে তিন বার খোরকিসহ ৬’শ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। তার উপর পাটের ফলন ভাল হচ্ছে না। বিঘা প্রতি ১০-১২ মন ফলন হচ্ছে, ফলে কৃষকের লাভ থাকছে না। ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার বিজুলিয়া গ্রামের চাষি বাচ্চু মোল্লা জানান, এবার পাট চাষে তার লাভ থাকবে না। যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর গ্রামের চাষি ইজাজুল ইসলাম বলেন, তাদের এলাকার পাটের মান ভাল হয় না। প্রতিমণ ১২’শ টাকা থেকে ১৪’শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান এক বিঘাতে পাট চাষ, কাটা, জাগ দেওয়া ও ধোয়া মিলিয়ে ১১-১২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তাতে লাভ থাকছে না।
পাট ব্যবসায়ীরা জানান, মাগুরা জেলার লাঙ্গলবাঁধ, শ্রীপুর, গাংনালীয়া, খামারপাড়া, নাকোল, মগুরা সদর, শত্রুজিত্পুর, বিনোদপুর, মহম্মদপুর, শালিখা, আড়পাড়া, ও সীমাখালী, ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা, কাতলাগাড়ি, ভাটই, হাটফাজিলপুর, রয়েড়া, কাঁচেরকোল, ঝিনাইদহ সদর, হাটগোপালপুর, ডাকবাংলা, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, খালিশপুর ও মহেশপুর, যশোর জেলার বারিনগর, চৌগাছা, ঝিকরগাছা, নাভারন, কেশবপুর, রূপদিয়া, বসুনদিয়া, নারিকেলবাড়িয়া, খাজুরা, ও মনিরামপুর, কুষ্টিয়া জেলার বিত্তিপাড়া, পোড়াদহ, পান্টি, চৌরঙ্গি, কুমারখালি, ডাশা, খোকসা, ভেড়ামারা, মিরপুর, দৌলতপুর ও গ্রাগপুর, মেহেরপুর জেলার গাংনী, বামুনদী, মেহেরপুর সদর ও বারাদী, চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা, মুন্সিগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা সদর, জীবননগর, দর্শনা ও জীবননগর মোকামে প্রচুর পাট উঠছে। প্রতি মন ১২’শ টাকা থেকে শুরু করে ১৮’শ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব পাট কিনে ব্যবসায়ীরা ফরিদপুর, যশোর, ঝিনাইদহ ও মাগুরার জেলায় গড়ে উঠা ছোট ছোট পাটকল গুলোর কাছে বিক্রি করছে। আবার কেউ কেউ খুলনার দৌলতপুরে চালান পাঠাচ্ছে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাজারে নতুন পাট দামে খুশি নয় কৃষক

আপডেট টাইম : ০২:৫৯:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৭
হাওর বার্তা ডেস্কঃ পশ্চিমের জেলাগুলোর হাট-বাজারে প্রতি মন (৪০ কেজি) পাট ১২’শ টাকা থেকে ১৮’শ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। এ দামেও চাষি খুশি নন। চাষিরা বলছে, এ দামে পাট বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না। হাট-বাজার গুলোতে পাটের আমদানি বাড়ছে। ভরা মৌসুম শুরু হয়ে গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার যশোর জেলায় ৩১ হাজার ৪’শ হেক্টরে, ঝিনাইদহ জেলায় ২৪ হাজার ১৭২ হেক্টরে, মাগুরা জেলায় ৪০ হাজার ৪৪০ হেক্টরে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ২২ হাজার ৭০ হেক্টরে, মেহেরপুর জেলায় ২৫ হাজার ৮৪৫ হেক্টরে ও কুষ্টিয়া জেলায় ৪১ হাজার ৫৩৩ হেক্টরে পাট চাষ হয়েছে। এ অঞ্চল এক সময় পাট চাষের জন্য বিখ্যাত ছিল। গড়ে উঠেছিল পাটের মোকাম। এক সময়ের সোনালী আঁশ কৃষকের গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়ায়। চাষি পাট চাষ ছেড়ে অন্য ফসল চাষে ঝুঁকে। গত ৭-৮ বছর পাটের দাম একটু একটু করে চড়ে। ফলে চাষি ফের পাট চাষে ঝুঁকেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, প্রতি বছর পাট চাষ বাড়ছে। জুলাই মাসের প্রথম থেকে বাজারে নতুন পাট উঠতে শুরু করে। ভাল মানের পাট প্রতি মন দু হাজার টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হয়। বর্তমানে দাম একটু কমেছে। চাষিদের কথা পাট চাষে খরচ অনেক বেড়েছে। এক বিঘা জমির পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও ধুতে ১০-১১ হাজার টাকা কামলা খরচ লাগছে। কামলার দৈনিক মজুরি চড়ে তিন বার খোরকিসহ ৬’শ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। তার উপর পাটের ফলন ভাল হচ্ছে না। বিঘা প্রতি ১০-১২ মন ফলন হচ্ছে, ফলে কৃষকের লাভ থাকছে না। ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার বিজুলিয়া গ্রামের চাষি বাচ্চু মোল্লা জানান, এবার পাট চাষে তার লাভ থাকবে না। যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর গ্রামের চাষি ইজাজুল ইসলাম বলেন, তাদের এলাকার পাটের মান ভাল হয় না। প্রতিমণ ১২’শ টাকা থেকে ১৪’শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান এক বিঘাতে পাট চাষ, কাটা, জাগ দেওয়া ও ধোয়া মিলিয়ে ১১-১২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তাতে লাভ থাকছে না।
পাট ব্যবসায়ীরা জানান, মাগুরা জেলার লাঙ্গলবাঁধ, শ্রীপুর, গাংনালীয়া, খামারপাড়া, নাকোল, মগুরা সদর, শত্রুজিত্পুর, বিনোদপুর, মহম্মদপুর, শালিখা, আড়পাড়া, ও সীমাখালী, ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা, কাতলাগাড়ি, ভাটই, হাটফাজিলপুর, রয়েড়া, কাঁচেরকোল, ঝিনাইদহ সদর, হাটগোপালপুর, ডাকবাংলা, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, খালিশপুর ও মহেশপুর, যশোর জেলার বারিনগর, চৌগাছা, ঝিকরগাছা, নাভারন, কেশবপুর, রূপদিয়া, বসুনদিয়া, নারিকেলবাড়িয়া, খাজুরা, ও মনিরামপুর, কুষ্টিয়া জেলার বিত্তিপাড়া, পোড়াদহ, পান্টি, চৌরঙ্গি, কুমারখালি, ডাশা, খোকসা, ভেড়ামারা, মিরপুর, দৌলতপুর ও গ্রাগপুর, মেহেরপুর জেলার গাংনী, বামুনদী, মেহেরপুর সদর ও বারাদী, চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা, মুন্সিগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা সদর, জীবননগর, দর্শনা ও জীবননগর মোকামে প্রচুর পাট উঠছে। প্রতি মন ১২’শ টাকা থেকে শুরু করে ১৮’শ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব পাট কিনে ব্যবসায়ীরা ফরিদপুর, যশোর, ঝিনাইদহ ও মাগুরার জেলায় গড়ে উঠা ছোট ছোট পাটকল গুলোর কাছে বিক্রি করছে। আবার কেউ কেউ খুলনার দৌলতপুরে চালান পাঠাচ্ছে।